পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করেছে চতুর্থ প্রজন্মের ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড। প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ৪২৮ কোটি টাকা তোলার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) আবেদন করেছে ব্যাংকটি।
চলতি সপ্তাহে ব্যাংকের পক্ষ থেকে বিএসইসিতে তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করা হয়েছে। ইউনিয়ন ব্যাংকের আবেদনকৃত ৪২৮ কোটি টাকা থেকে এসএমই খাতে ব্যয় করা হবে ২৭১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। গভর্নমেন্ট সিকিউরিটিজে ১০০ কোটি ও পুঁজিবাজারে ৫০ কোটি টাকা এবং আইপিও ব্যয় নির্বাহে আরও ছয় কোটি ৫০ লাখ টাকা খরচ করবে বলে জানায় ব্যাংকটি।
ব্যাংকটিকে আইপিওতে আসতে ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছে প্রাইম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট এবং কো ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্টস কাজ করছে বলে কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে।
চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংক হিসেবে আরও আটটি ব্যাংকের সঙ্গে ২০১৩ সালে অনুমোদন পাওয়ার পর বাংলাদেশে ব্যবসা শুরু করে ব্যাংকটি। শুরু থেকে ইসলামি ব্যাংকিংয়ের নিয়ম অনুযায়ী ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড।
সূত্রে জানা যায়, ব্যাংকটি জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার আওতায় আসতে চায়। এছাড়া পুঁজিবাজারের সুবিধা পেতে ও আমানতকারী, এর সেবাগ্রহীতা এবং ব্যাংকটির দেশীয় ব্র্যান্ডিংয়ের জন্যও আইপিওতে আসতে ইচ্ছুক ব্যাংকটি।
ব্যাংক সূত্র থেকে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত বছরে এর নিট মুনাফা হয়েছে ৯৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ৩৯ কোটি ৩৯ লাখ টাকা বেশি। এর আগের বছর ব্যাংকটির মুনাফা ছিল ৫৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এছাড়া ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে এক টাকা ৭৭ পয়সা, যা আগের বছরের তুলনায় ৭১ পয়সা বেশি। আগের বছর ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় ছিল এক টাকা শূন্য ছয় পয়সা।
ব্যাংকটির প্রসপেক্টাস অনুসারে, এর বিনিয়োগ-পরবর্তী আয় ছিল এক হাজার ৯৭৪ কোটি এক লাখ টাকা এবং ২০২০ সালে অপারেটিং আয়ের পরিমাণ ছিল ৫৯৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা। এছাড়া ব্যাংকটির রক্ষিত আয় ছিল ১৪৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা এবং তাদের মোট সম্পদ ছিল ২১ হাজার তিন কোটি টাকা। সম্পদের ওপর এর রিটার্ন ছিল শূন্য দশমিক ৫১ শতাংশ এবং ইক্যুইটি ছিল ১১ দশমিক ২৩ শতাংশ।
২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত ব্যাংকটির ঋণদাতার মোট শ্রেণিবদ্ধ ঋণ ছিল ৪৩০ কোটি টাকা এবং মোট বকেয়া ঋণ ছিল ১৭ হাজার ৬৫৪ কোটি টাকা। এছাড়া ব্যাংকটির খারাপ ঋণের পরিমাণ ছিল ১০৪ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, ব্যাংক খাতে মোট বকেয়া ঋণের অনুপাতে খেলাপি ঋণ চলতি বছর মার্চ পর্যন্ত ছিল আট দশমিক ৪৮ শতাংশ।
ইউনিয়ন ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন এক হাজার কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৫৫৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। অনুমোদন পাওয়ার পর ব্যাংকটি সারাদেশে ৯৬টি শাখা ও ২৩টি উপ-শাখার মাধ্যমে এর গ্রাহকদের সেবা দিচ্ছে। এছাড়া ব্যাংকটি পল্লী বিদ্যুতের বিল সংগ্রহের জন্য ৯টি বুথ পরিচালনা করছে। ♦