ইউক্রেনে আরও অর্থসহায়তায় ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এজন্য অতিরিক্ত ৩০ কোটি ডলার দেয়া হবে। ইউক্রেনের নিরাপত্তায় এ অর্থ বরাদ্দ দেবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ পেন্টাগন।
এর আগে রাশিয়া রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করলে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা দেবে বলে ঘোষণা দিয়েছিল। এ পর্যন্ত ওয়াশিংটন ১৬০ কোটি ডলার সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
পেন্টাগন স্থানীয় সময় গত শুক্রবার নতুন অর্থ সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা শক্তি বাড়াতে তারা এ সহায়তা দিচ্ছে বলে জানায় পেন্টাগন। পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি এক বিবৃতিতে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আর্থিক সহায়তা দেয়ার মাধ্যমে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে। সহযোগী ও অংশীদার দেশগুলোর মাধ্যমে তাদের সহায়তা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
প্রতিরক্ষা সহায়তার মধ্যে রয়েছে লেজার রকেট সিস্টেম, ড্রোন, গোলাবারুদ, রাতে ব্যবহারযোগ্য যুদ্ধাস্ত্র, কৌশলগত সুরক্ষিত যোগাযোগব্যবস্থা ও চিকিৎসা সরঞ্জাম।
গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর জন্য ‘অতিরিক্ত শক্তি’ বাড়াতে আলোচনা করেন বলে এক বিবৃতিতে জানায় হোয়াইট হাউজ।
গত মাসের মাঝামাঝি যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ইউক্রেনে মানবিক ও সামরিক সহায়তার জন্য ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার তহবিলের ঘোষণা দিয়েছে। এ অর্থ দিয়ে পূর্ব ইউরোপের ন্যাটো দেশগুলোকেও সহায়তা করা হবে। এর কয়েকদিন পন ইউক্রেনে আরও ১০০ কোটি ডলার সহায়তার ঘোষণা দেয় বাইডেন।
ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানকে অবৈধ অ্যাখা দিয়ে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অস্ত্র সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য ও পোল্যান্ডসহ মিত্র দেশগুলো। কিয়েভকে আরও অস্ত্র সহায়তা দেয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট।
এরই ধারাবাহিকতায় ইউক্রেনে যুদ্ধ ট্যাংক সরবরাহের অনুমোদন দিয়েছে জার্মানি। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, শিগগির ৫৬টি ট্যাংক ইউক্রেনে সরবরাহ করা হবে।
ট্যাংগুলো পিবিভি ৫০১ মডেলের। স্নায়ুযুদ্ধের সময় পূর্ব জার্মানীর সেনাবাহিনী থেকে পাওয়া ট্যাংকগুলো সুইডেনের কাছে বিক্রি করা হয়। পরবর্তী সময়ে চেক প্রজাতন্ত্রের কাছেও বিক্রি করা হয়। এখন ওই ট্যাংকগুলো ইউক্রেনে সরবরাহ করা হবে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য।
কোনো যুদ্ধরত দেশে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম সামরিক সরঞ্জাম পাঠানোর অনুমতি দিয়েছে জার্মান সরকার। শুধু ট্যাংক নয়, ইউক্রেনকে আরও আধুনিক সামরিক সরঞ্জাম দিয়ে সহায়তার কথা জানিয়েছে জার্মানি।
এদিকে যুদ্ধ বন্ধে ইতোমধ্যে রাশিয়া ও ইউক্রেনের সঙ্গে কয়েকবার আলোচনা হয়েছে। ইউক্রেন বলছে, ন্যাটোতে যোগ না দিয়ে তাদেরকে নিরপেক্ষ থাকার যে দাবি মস্কো জানিয়েছে তারা সেটি বিবেচনা করবে। তবে তারা তাদের ভৌগলিক অখণ্ডতা অথবা সার্বভৌমত্বের ব্যাপারে কোনো ধরনের আপোস করবে না।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট তার দেশের নিরপেক্ষ অবস্থান নেয়ার কথা বললেও তিনি বলেছেন এ বিষয়ে গণভোট হতে হবে এবং সেটা হবে রুশ সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয়ার পর। এজন্য কতদিন লাগবে ও ক্রেমলিন এটা মেনে নেবে কি না তা বলা কঠিন। ♦