আর লকডাউন নয়: এফবিসিসিআই সভাপতি

0

দেশে আবার কোভিড-১৯-এর প্রকোপ বাড়তে থাকলেও লকডাউনের মতো কঠোর বিধিনিষেধ না দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীতে এখন কোনো দেশ লকডাউন দিচ্ছে না, কারণ লকডাউনের কারণে ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে। গত বছর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার কারণে আমাদের রপ্তানি বাড়ছে। কোভিড মহামারির মধ্যেও আমরা জিডিপির পাঁচ দশমিক ৪৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি। অথচ আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ পৃথিবীর অনেক দেশে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে।’

করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের প্রভাবে পুরো বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও শনাক্ত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বেশ কয়েকটি বিধিনিষেধ ফিরিয়ে এনেছে সরকার।

গতকাল থেকে উন্মুক্ত স্থানে সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান কিংবা সভা-সমাবেশ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। ট্রেন, বাস ও লঞ্চে সক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নেয়া যাবে। রেস্তোরাঁয় বসে খেতে এবং আবাসিক হোটেল থাকতে দেখাতে হবে টিকা সনদ। ১২ বছরের বেশি বয়সের শিক্ষার্থীদের টিকা সনদ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

২০২০ সালে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরু হলে মার্চের শেষ দিকে দেশজুড়ে লকডাউন জারি করা হয়, যা দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলে। সেই লকডাউনে জরুরি সেবার পরিবহন ও জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যে কারও চলাচল ছিল বারণ। সব অফিস-আদালতের পাশাপাশি কল-কারখানাও বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।

পরিস্থিতির উন্নতিতে পরে সেই বিধি-নিষেধ শিথিল করা হয়। ডেল্টা সংক্রমণের পর গত বছর এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত নানা সময় লকডাউনের বিধিনিষেধ ছিল। তবে ‘জীবন ও জীববিকার ভারসাম্য’ রক্ষায় এ দফায় কল-কারাখানা খোলা রাখার অনুমতি দেয়া হয়।

এরপর সংক্রমণের হার দ্রুত কমে এলে গত বছর সেপ্টেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলে। জীবনযাত্রা অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে আসে।

তবে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ সৃষ্টির পর ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে বাংলাদেশেও কভিড সংক্রমণ আবার বাড়তে শুরু করেছে। গত মঙ্গলবার এক দিনে শনাক্ত কভিড রোগীর সংখ্যা দুই হাজার ৪০০ ছাড়িয়ে গেছে, সেইসঙ্গে দৈনিক শনাক্তের হার পৌঁছেছে ৯ শতাংশের কাছাকাছি।

এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘নতুনভাবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবার বৃদ্ধি পাওয়ার এ সময়ে লকডাউন নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে ব্যবসায়ী সমাজ।’

গতবারের লকডাউনের কারণে পোশাক কারখানাগুলোয় এখনও ১৫ শতাংশ শ্রমিক সংকটে রয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গত বছর ১৩ থেকে ১৪ দিন পোশাক কারখানা বন্ধ থাকায় শ্রমিকেরা চাকরি ছেড়ে বাড়ি গিয়ে আর ফিরে আসেনি। সুতরাং লকডাউনই সমাধান নয়, এর কারণে ক্ষতি হচ্ছে।’

তার বদলে স্বাস্থ্য সচেতনতার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার যে টিকা ছাড়া হোটেল-রেস্টুরেন্টে যাওয়া কিংবা সমাবেশ বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছে, এটাকে আমি সমর্থন করি। আমাদের জোর দিতে হবে টিকা ও স্বাস্থ্য সচেতনতায়।’

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিব। ডিআরইউর সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠুও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

Share.