ব্যান্ডসঙ্গীত প্রেমিদের জন্য আজ স্কাই ট্র্যাকার লিমিটেডের আয়োজনে ও বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় ১৫টি ব্যান্ড দল নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো শুরু হতে যাচ্ছে ঢাকা রক ফেস্ট ২.০।
এ কনসার্টের পিছনে যারা কাজ করছেন, তাদের নিয়ে খুব বেশি আলাপ হয় না। এবার রক ফেস্টের পেছনে থাকা এমন একজন স্কাই ট্র্যাকার প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী দোজা এলান। তিনি রক ফেস্ট নিয়ে দিয়েছেন নানা প্রশ্নের উত্তর-
কোন ধারণা থেকে প্রতিবছর ঢাকা রক ফেস্টের আয়োজন করে থাকেন এমন প্রশ্নে স্কাই ট্র্যাকার প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী দোজা এলান বলেন, ‘‘এক যুগের বেশি সময় ধরে নানা ধরনের কনসার্টের আয়োজন করে আসছি। আমার সব সময় ইচ্ছে ছিলো দেশের আন্ডার গ্রাউন্ডের ব্যান্ডগুলোকে বড় কনসোর্টে শো করার সুযোগ করে দেয়া। সেই ধারণা থেকেই আমাদের রক ফেস্টের আয়োজন। এই শো’র মাধ্যমে অনেক আন্ডার গ্রাউন্ডের ব্যান্ড থেকে মেইন স্টিমে নিয়ে আসার জন্যই আমরা প্রতি বছর রক ফেস্ট আয়োজনের জন্য কাজ করছি। এবারও সেই ইচ্ছা থেকে কনসার্টের আয়োজন। আর সেটা হবে বছরের শেষের দিকে, কারণ বছর শেষে শীতের আমেজে কনসার্টের উত্তাপ ভক্তদের উষ্ণতায় আগলে রাখে। সেজন্য স্কাই ট্র্যাকার লিমিটেডের আয়োজনে এবং বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় দ্বিতীয় বারের মতো শুরু করতে যাচ্ছি ঢাকা রক ফেস্ট ২.০।”
দেশের সবচেয়ে বড় রক ফেস্ট তাহলে সব ব্যান্ডকে একত্রে যুক্ত করে না কেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সত্যিকার অর্থে আমাদের দেশের প্রচুর ব্যান্ড দল রয়েছে। যাদের একত্রে করে একদিনের প্রোগাম করা সম্ভব না। তাছাড়া দেশের যারা বড় ব্যান্ড দল রয়েছে তারা সবসময় বড় বড় শো করে থাকে। আমরা চাই দেশের ছোট ছোট ব্যান্ড দলগুলো তারা একটু বেশি সুযোগ পাক রক ফেস্টের এই বড় শো-তে। তবে আমাদের চিন্তা ভাবনা রয়েছে আগামীতে দুই দিনব্যাপী ঢাকা রক ফেস্ট করার। এতে আরও বেশি ব্যান্ড দল শো করার সুযোগ পাবে।’’
রক ফেস্ট উন্মুক্ত স্থানে করতে পারলে কেমন হতো এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘কনসার্ট মানেই ওপেন এয়ার। তবে কিছু বাঁধার কারণে এবছর ইনডোরের আয়োজন করতে হচ্ছে। এছাড়া এ বছর করোনার কারণে আমাদেরকে ছোট করে প্রোগাম করতে হচ্ছে। তাছাড়া ওপেন এয়ার এ প্রোগাম করতে দরকার ভেন্যু। আমাদের কনসার্টের জন্য আলাদা কোনো ভেন্যু নেই, যা আছে তা হল মাঠ। নির্ধারিত একটা স্থান থাকলে হয়ত ভেন্যু নিয়ে ভাবতে হত না বা ওপেন এয়ার করা নিয়েও ভাবতে হত না। বাইরের দেশে কনসার্ট বলেন বা যে কোনো আয়োজন বলেন তা নির্ধারিত হয় অন্তত এক বছর আগে। আমাদের এখানে সেই সুযোগটা কম। এখানে খুব সংক্ষিপ্ত নোটিশে একটা আয়োজন হয়ে থাকে। তাই ভেন্যুর জন্য তৈরি হওয়া বা অনুমতি নেয়ার ব্যাপারটায় আর সময় হয়ে উঠে না। তবে আমরা আগামী বছরগুলোতে আবারও ওপেন এয়ারে চলে যাব।’’
টিকিটের মূল্য নিয়ে প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, ‘‘বিশ্বের আর কোথাও বিনামূল্যে সঙ্গীত পাওয়া যায় না। একমাত্র বাংলাদেশে সঙ্গীত ‘ফ্রি’। ভাবা যায়! অথচ দর্শক কিন্তু চায়। তাই সবাইকে অনুরোধ ভালো সঙ্গীতের জন্য টিকেট কেটে খরচ করে একটি আয়োজন উপভোগ করার। তাছাড়া গত বছরের থেকে কিন্তু আমাদের খরচ কমে নাই। যার কারণে যেহতেু ছোট জায়গাতে অল্প সংখ্যক দর্শক নিয়ে প্রোগাম করতে হচ্ছে সে কারণে টিকেটের দাম একটু বেশি ধরা হয়েছে। তবে ৫০০ টাকায় ১৫টি ব্যান্ডের শো কি আসলেই বেশি?’’
রক ফেস্ট নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘প্রতি বছর আমরা ঢাকায় একটি করে রক ফেস্ট করবো। তবে এই রক ফেস্টের আদলে প্রতি বছর বিভাগীয় শহরগুলোতে আমাদের রক ফেস্ট করার পরিকল্পনা রয়েছে। যাতে আঞ্চলিক ব্যান্ডগুলো মানুষের সামনে ফোকাস হতে পারে। আমরা চাই রক ফেস্টের মাধ্যমে দেশে ভালো ভালো ব্যান্ড বেড়িয়ে আসুক।’’
দূর্যোগকালে হত-দরিদ্রদের সাহায্য করতে বিভিন্ন কনসার্ট করে থাকে। আপনাদের কি এ ধরনের কোন পরিকল্পনা রয়েছে, এ প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘আপাতত আমাদের এই ধরনের পরিকল্পনা নেই। কারণ এতো বড় প্রোগাম করার জন্য আমাদের তেমন সুযোগ নেই। রক ফেস্ট হয়ে থাকে শুধু আন্ডার গ্রাউন্ডের ব্যান্ড দল নিয়ে। তবে আমরাও দেশের দূর্যোগকালীন সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতেও বিভিন্ন ধরনের আয়োজন করতে চেষ্টা করবো। তার জন্য আমাদের অনেক পরিকল্পনা রয়েছে।’’ ♦