২০২০ সালের শেষ দিন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওতে লটারিপদ্ধতি তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একইসঙ্গে আইপিও আবেদনের আগে বিনিয়োগকারীর সেকেন্ডারি বাজারে ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পাশাপাশি আইপিও আবেদনের ন্যূনতম চাঁদা ১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর আইপিও আবেদনের ক্ষেত্রে কোনো ঊর্ধ্বসীমা রাখা হয়নি।
আইপিওর লটারি তুলে নেওয়া ও আবেদনের ক্ষেত্রে ন্যূনতম বিনিয়োগের বাধ্যবাধকতা শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এমন মনে করছেন বিশ্লেষক ও বাজারসংশ্লিষ্টরা। তাই নতুন বিধানকে স্বাগত জানিয়েছেন বাজারসংশ্লিষ্ট সবাই।
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিএসইসির নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে সেকেন্ডারি বাজারে বিনিয়োগ বাড়বে। আইপিওতে আবেদনও বেড়ে যাবে।
শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দুটি অংশ রয়েছে। একদল সেকেন্ডারি বাজারে নিয়মিত লেনদেন করেন। অন্য দলটি আইপিও বাজারনির্ভর। নতুন বিধানের ফলে সেকেন্ডারি বাজারের বিনিয়োগকারীরাও যেমন আইপিওতে আবেদনে আগ্রহী হবেন, তেমনি আইপিও আবেদনকারীদের সেকেন্ডারি বাজারে ন্যূনতম বিনিয়োগ করতে হবে।
অনেকে বলছেন, আইপিও আবেদনের আগে সেকেন্ডারি বাজারে ন্যূনতম বিনিয়োগের বিধানের ফলে বাজারে যেসব নতুন বিনিয়োগ আসবে, তা ঘুরেফিরে দীর্ঘমেয়াদে বাজারে থাকবে। কারণ, আইপিওতে আবেদন করতে ন্যূনতম বিনিয়োগ দেখাতে হয়। তাই যে বিনিয়োগকারীরা শুধু আইপিওতেই বিনিয়োগ করেন, তাঁরা নির্দিষ্ট পরিমাণ একটি অর্থ দীর্ঘমেয়াদি সেকেন্ডারি বাজারে বিভিন্ন সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করে রাখবেন।
প্রসঙ্গত শেয়ারবাজারে আইপিওর কাজটি করে মার্চেন্ট ব্যাংক। তাদের একটি অংশ নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে দীর্ঘদিন ধরে আইপিও প্রক্রিয়ার সময় ও খরচ কমিয়ে আনার কথা বলে আসছেন। এ জন্য মার্চেন্ট ব্যাংকারদের অনেকে বিএসইসির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে লটারি পদ্ধতি তুলে নেওয়ার কথা বলে আসছিলেন।
স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে শেয়ার ও বিও হিসাব সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড বা সিডিবিএলের হিসাবে, ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ শেষে শেয়ারবাজারে সক্রিয় বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে ২৫ লাখ। এর মধ্যে ৬ লাখ ১৪ হাজার বিও হিসাব শেয়ারশূন্য অবস্থায় রয়েছে। এসব বিও হিসাবের বড় অংশ মূলত আইপিও আবেদনের জন্য ব্যবহার হয়।
এ ছয় লাখ বিও হিসাব থেকে ভবিষ্যতে আইপিও আবেদন করা হলে, প্রত্যেক বিও হিসাবের বিপরীতে ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা করে বিনিয়োগ করতে হবে। এতে সেকেন্ডারি বাজারে প্রায় ১ হাজার ২৩০ কোটি টাকার নতুন বিনিয়োগ আসবে। ♦