কভিড-১৯ স্থবির করে দিয়েছে জীবনযাত্রা। বাড়ছে মৃত্যু। এক বছরের বেশি সময় ধরে করোনাভাইরাস জনজীবনে এনে দিয়েছে ভিন্ন অভিজ্ঞতা। প্রথমে শুধু করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা, এরপর একে একে বিভিন্ন ভেরিয়েন্ট ছড়িয়ে পরায় তা আরও বিধ্বংসী রূপ নিচ্ছে।
ভারত থেকে প্রায় ৯৮টি দেশে ডেল্টা ভেরিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশেও করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তার বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালগুলোয বেড়েছে অক্সিজেনের চাহিদা। তাই কভিড রোগীদের বিনা খরচে লিকুইড অক্সিজেন সহায়তা দিয়ে আসছে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক শিল্পগ্রুপ আবুল খায়ের।
এরই মধ্যে ২০টি হাসপাতালে বিনা খরচে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা স্থাপন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
সম্প্রতি অক্সিজেনের চাহিদা আরও বেড়ে যাওয়ায় মেডিকেল অক্সিজেন সহায়তা কার্যক্রম আরও বাড়িয়েছে আবুল খায়ের গ্রুপ। লিকুইড অক্সিজেন সরবরাহ ২০ টন থেকে বাড়িয়ে এখন প্রায় ৩০ টনে উন্নীত করেছে গ্রুপটি।
জানা গেছে, তরল বা লিকুইড অক্সিজেনের বাড়তি চাহিদা মেটাতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে আবুল খয়ের গ্রুপ। শুরুর দিকে হাসপাতালগুলোয় প্রতিদিন ৭ টন তরল অক্সিজেন দেয়ার সক্ষমতা থাকলেও এখন তা বাড়িয়ে করা হয়েছে প্রায় ৩০ টন।
এছাড়া প্রতিদিন রিফিল করা হচ্ছে ৫০০ সিলিন্ডার। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর থেকে বিভিন্ন হাসপাতাল ও ব্যক্তি পর্যায়ে ১৮ হাজারের বেশি অক্সিজেন সিলিন্ডার বিনা খরচে রিফিল করা হয়েছে।
জরুরি প্রয়োজনে অক্সিজেন পৌঁছে দিতে একটি হটলাইন সেবা চালু করেছে আবুল খায়ের গ্রুপ।
প্রতিটি ১০ থেকে ২২ হাজার টাকার ৫ হাজারের বেশি অক্সিজেন সিলিন্ডার গ্যাসসহ বিভিন্ন হাসপাতাল ও করোনা আইসোলেশন সেন্টারকে অনুদান হিসেবে দিয়েছে আবুল খায়ের গ্রুপ।
করোনায় অক্সিজেন সংকট শুরুর পর প্রথম দিকে ১ দশমিক ৪ কিউবিক মিটারের অক্সিজেন সিলিন্ডার রিফিল করা হলেও পরে ৭ দশমিক ৫ কিউবিক মিটার অক্সিজেন সিলিন্ডার রিফিল করা হয়।
ইস্পাত তৈরির ক্ষেত্রে অক্সিজেন, নাইট্রোজেন ও কার্বনের প্রয়োজন হয়। আবুল খায়ের গ্রুপ চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের শীতলপুরে অবস্থিত তাদের ইস্পাত কারখানার প্রয়োজন মেটাতে ২০১২ সালে বহুজাতিক কোম্পানি লিন্ডে বাংলাদেশের সহায়তায় অক্সিজেন প্ল্যান্ট নির্মাণ শুরু করে।
২০১৫ সালে প্লাটটিতে উৎপাদন শুরু হয়। এর দৈনিক অক্সিজেন উৎপাদনের সক্ষমতা ২৬০ টন।
২০২০ সালে বাংলাদেশে করোনা মোকাবেলায় অতি জরুরি অক্সিজেনের প্রয়োজনে একেএস প্ল্যান্টে উৎপাদিত অক্সিজেন জনস্বার্থে উন্মুক্ত করে আবুল খায়ের গ্রুপ।
গ্রুপটি নিজস্ব উদ্যোগে ২০টি হাসপাতালে বিনা খরচে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা স্থাপন করে দিয়েছে।
চিকিৎসাসেবায় অক্সিজেন প্রসেসিংয়ের জন্য নতুন করে সরঞ্জামাদি সংযোজন করেছে আবুল খায়ের গ্রুপ। পাশাপাশি ৩০০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার আমদানিও করেছে।
প্রতিষ্ঠানের এজিএম মো. শামসুদ্দোহা জানান, ২০২০ সালে বাংলাদেশে করোনা মোকাবেলায় অতি জরুরি অক্সিজেনের প্রয়োজনে একেএস প্ল্যান্টে উৎপাদিত অক্সিজেন জনস্বার্থে উন্মুক্ত করে দেয় আবুল খায়ের গ্রুপ।
তিনি আরও জানান, নতুন করে মেডিকেল অক্সিজেনের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় মেডিকেল অক্সিজেন সহায়তা কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে। আগে যেখানে লিকুইড অক্সিজেন ১৫ থেকে ২০ টন সরবরাহ করা হতো, এখন সেটি বাড়িয়ে ২৫ থেকে ৩০ টন করা হয়েছে। ♦