কৃষক আন্দোলন চলাকালে ভারত সরকারের তরফে একাধিক টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মূলত যে অ্যাকাউন্টগুলো থেকে কৃষকদের পাশে থেকে সরকারের সমালোচনা করত, সেগুলো বন্ধ করে দেওয়ার অনুরোধ এসেছিল ভারত সরকারের তরফে। এক সাক্ষাৎকারে এ অভিযোগ এনেছেন টুইটারের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জ্যাক ডরসি।
তার এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে সরব হয়েছে দেশটির বিরোধী দল কংগ্রেস। যদিও কেন্দ্র এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখরের দাবি, একেবারে মিথ্যা বলছেন জ্যাক ডরসি। বারবার ভারতের নিয়মভঙ্গ করেছে টুইটার, সেই ইতিহাস লুকোতেই এই মন্তব্য করেছেন তিনি।
সম্প্রতি একটি ইউটিউব চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দেন টুইটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ডরসি। তাকে প্রশ্ন করা হয়, বিদেশি সরকারগুলো থেকে কখনও তার সংস্থাকে চাপ দেওয়া হয়েছিল? এর উত্তরে সাবেক সিইও প্রথমে ভারতের নাম নেন। তিনি বলেন, “কৃষক আন্দোলনের সময়ে ভারত সরকার অনেক টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিতে বলেছিল। বিশেষ করে কয়েকজন সাংবাদিকের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে বলা হয়, যারা সরকারের সমালোচনা করছে।”
এছাড়া ভারতের বর্তমান বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ তুলেছেন ডরসি। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “সরকারের তরফে বলা হয়, ভারতে টুইটার একেবারে বন্ধ করে দেওয়া হবে। টুইটার কর্মীদের বাড়িতে তল্লাশি চালানোর হুমকি দেওয়া হয়। পরে এই হুমকি কার্যকর করা হয়।”
জ্যাক ডরসির এই অভিযোগ হাতিয়ার করে আন্দোলনে নামছে কংগ্রেসের ছাত্র-যুবরা। ডরসির সাক্ষাৎকারের ভিডিও শেয়ার করে জাতীয় প্রেসিডেন্ট শ্রীনিবাস বিভি বলেন, “গণতন্ত্রের প্রকৃত রূপ দেখুন।”
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইন পাশ করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। তার প্রতিবাদে ব্যাপক আন্দোলন শুরু করেন কৃষকরা। দেশটির অনেক মানুষ তাদের পাশে দাঁড়ান। লাগাতার আন্দোলনের জেরে তিনটি আইন প্রত্যাহার করে মোদি সরকার।
পরের বছর ২০২১ সালে ভারতে কৃষক আন্দোলন সমর্থনকারী আড়াইশ অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয় টুইটার। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে টুইটারকে আইনি নোটিশ পাঠানোর পর এসব অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ফের নূন্যতম সহায়ক মূল্য নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছেন কৃষকরা। এ পরিস্থিতিতে ডরসির মন্তব্য ঘিরে শোরগোল চলছে দেশটির রাজনৈতিক মহলে। ♦